স্বদেশ ডেস্ক:
ঢাকা-৭ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের হওয়া দুটি মামলায় তদন্ত শেষে গতকাল রবিবার ঢাকা মহানগর হাকিমের আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট (চূড়ান্ত প্রতিবেদন) দাখিল করেছে পুলিশ। কী কারণ দেখিয়ে এ রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে তা জানা না গেলেও আদালতে রিপোর্টটি গৃহীত হলে আনীত অভিযোগের দায় থেকে মুক্ত হয়ে যাবেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত এ ওয়ার্ড কাউন্সিলর।
ফাইনাল রিপোর্ট সম্পর্কে জানতে চাইলে মামলা দুটির তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন কোনো মন্তব্য করতে অসম্মতি জানান। এ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ জানান তিনি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা অবশ্য আমাদের সময়কে জানান, ইরফান সেলিমের পজিশন থেকে অস্ত্র-মাদক উদ্ধারের সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া তদন্তকালে পারিপার্শ্বিক যেসব সাক্ষ্যপ্রমাণ মিলেছে, সেগুলোতেও তার সম্পৃক্ততা মেলেনি। এসবই উল্লেখ করা হয়েছে আদালতে দাখিলকৃত চূড়ান্ত প্রতিবেদনে। সঙ্গত কারণেই ইরফান সেলিম অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে তার বিরুদ্ধে করা দুই মামলায় ছাড়া পেতে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত গত বছরের ২৫ অক্টোবর রাতে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ‘সংসদ সদস্য’ সাঁটা সরকারি গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর করা হয়। পর দিন এ ঘটনায় ইরফানসহ আরও চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ২-৩ জনকে আসামি করে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন তিনি। পর দিন ২৬ অক্টোবর দুপুরে রাজধানীর চকবাজারের ২৬ দেবীদাসঘাট লেনে ‘চাঁন সরদার দাদাবাড়ি’তে অভিযান শুরু করে র্যাব। রাতে অভিযান শেষে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, হাজী সেলিমের বাসা থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, গুলি, একটি এয়ারগান, ৩৭টি ওয়াকিটকি, ১০ ক্যান বিয়ার, একটি হাতকড়া, একটি ড্রোন, ৪০৬ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, বিদেশি মদ ও বিয়ার পাওয়া গেছে। এ ছাড়া র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত ইরফান সেলিমকে দেড় বছর ও তার দেহরক্ষীকে এক বছর কারাদ- দেন। পরে অস্ত্র ও মাদক আইনে দেহরক্ষীসহ ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা করে র্যাব। ওই মামলা দুটিই তদন্ত শেষে পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা গতকাল আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করেছেন। অন্যদিকে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় ইরফান সেলিম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে যে মামলা করেছিলেন, সেটি বর্তমানে তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধরের ঘটনার পর সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থার তরফে হাজী সেলিমের অবৈধ দখলে থাকা জমি ও স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করে; রিমান্ডে আনা হয় ইরফান সেলিমকে। তবে পুলিশের বারংবার জেরার মুখেও তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ অস্বীকার করেন ইরফান সেলিম।